Admin1234@ ২৭ অক্টোবর ২০২৫ , ৩:৫৩:১৯ 55
আবুল হাশেম
দামুড়হুদা উপজেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা।

যুগপৎ আন্দোলনের চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে গণভোটসহ ৫ দফা দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- গণভোটের আয়োজন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিতে সাংবিধানিক আদেশ প্রদান, জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর (প্রতিনিধিত্বমূলক) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, গণহত্যার বিচার, নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার ও তাদের বিচারকালীন কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণ।
আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর ২০২৫) বিকেল সোয়া ৩টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। ব্যানার-ফেস্টুন হাতে দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিলটিতে অংশ নেন।
মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় নেতাকর্মীরা সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং তাদের ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। মিছিল শেষে চুয়াডাঙ্গা শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদ হাসান চত্বরে এক সমাবেশে মিলিত হন তারা।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামান সজীব। তার বক্তব্যে তিনি সরকারের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়ন না হওয়ার অভিযোগ তোলেন।
তিনি বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে দেশে যে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের সুযোগ তৈরি হয়েছিল, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে।
বর্তমান সরকার সংস্কারের নামে যে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করেছে, তাতে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ থাকায় এটি প্রকৃত সংস্কার দলিল নয়, বরং এটি দলীয় মতামতের প্রতিফলন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখনো পর্যন্ত এই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়নি, যা জনগণের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।”
হাসানুজ্জামান সজীব আরও অভিযোগ করেন, “দেশের বর্তমান বাস্তবতায় ফ্যাসিবাদের দোসরদের দৌরাত্ম্য সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ তাদের আইনের আওতায় আনার বা বিচারের মুখোমুখি করার কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
আমরা মনে করি, এমন পরিস্থিতিতে জুলাই অভ্যুত্থানে উৎসর্গিত রক্তের মর্যাদা রক্ষায় রাজপথে থাকা এখন সময়ের দাবি।”
তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জনগণের ন্যায়সংগত দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
যদি তাতেও সরকারের বোধোদয় না ঘটে এবং জনদাবি উপেক্ষিত হয়, তাহলে এই আন্দোলন আরও কঠোরতর হবে এবং দেশব্যাপী দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
বিক্ষোভ মিছিলে ও সমাবেশে জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামান সজীব ছাড়াও দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সহ-সভাপতি রুহুল আমীন সোহেল, মাওলানা জহুরুল ইসলাম, এনামুল কবীর জিপসী, সেক্রেটারি তুষার ইমরান সরকার।
এছাড়াও সমাবেশে অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি নাজিমুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মীর শফিউল ইসলাম এবং ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেনসহ অন্যান্য দলীয় অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে তাদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
নেতৃবৃন্দ তফসিল ঘোষণার আগে তাদের ৫ দফা দাবি মেনে নিয়ে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানান।















